0

লাইফ ইজ নট এ বেড অব রোজেস

Share

শারমিনুর নাহার

দুপুর

ইনকাম ছাড়া ইনকাম ট্যাক্স। নিষ্কাম প্রেম। ইনকাম! নিষ্কাম!

রেহানা মরিয়ম নুর!

দেখতে হবে

* ছোট শিশুটির কাশি কমেছে কিনা খবর নিতে হবে

* সকালের ঔষধ খাইয়েছে কিনা জানতে হবে

* ঘুমের মধ্যে কাশিতে ওঠে গেল কিনা

* ফ্যান চালিয়ে রাখল কিনা

* ভ্যানটা কোথায় গেল

* স্যান্ডেল ছিঁড়ে গেল

* সিএনজিচালক ওয়ারি বটেশ্বর যাবে কিনা জানতে হবে

* পাঠাও নারিন্দা খ্রিস্টান কবরস্থান যাবে

* আগারগাঁও কলোনিতে যাবো একবার

* নয়নতারা পুরানো কার্নিশে ফুটে থাকে

* শহীদুল জহিরের চোখে কী তা পড়েছিল কোনদিন?

* কোন পানা পুকুর একটা কচুরিপানা ফুল আরো দুর্দান্ত বেগুনি

* কচুরিপানার সঙ্গে সঙ্গমরত একটি হলুদ গোখড়া!!

* কমলাকান্তের মন প্রসন্নগোয়ালিনী চুরি করে নিল। ‘আমার মন’ কোথায় গেল? গোয়াল ঘরে? কিন্তু এখানে গোয়াল ঘর কোথায়? চারদিকে কেবল খোয়াড়। সবাই সবার পাছা মারতে ব্যস্ত। গোবর! কাউডাং। কতদিন গোয়াল ঘর দেখিনি। গোয়াল ঘরের গন্ধ। ঘুটা! ঘুটা কুড়ানো বুড়ি। ‘পাতা কুড়ানি মেয়ে’ আবুল হাসানের কবিতাটা নিপু খুব ভালো আবৃত্তি করতো। যতবার শুনতাম চোখের সামনে ছেলেবেলার পাতাকুড়ানি শিশুদের দেখতাম। ওরা পুলিশ লাইন যেতো পাতা কুড়াতে। সকালে পাতা কুড়িয়ে আনতে পারলে তাদের মা দুটো চাল ফুটাতো। ওই ওদের আহার্য। কতবার ওদের পেছন পেছন যাবো বলে বায়না ধরেছি। ফুলবানু একবার কোলে নিয়ে দৌড় দিয়েছিল। ফুলবানু ছিল আমাদের দেখাশুনার দায়িত্বে। আমাদের খেলার সঙ্গী। ঠিক কত বড় আমি- মনে নেই। তবে গগন (ছোট ভাই) ফুলবানুর কোলে এটা মনে আছে। গগনকে কোলে নিয়ে আর আমার হাতটা শক্ত করে ধরে ফুলবানু দৌড় দিত।

হেলিকাপ্টার এসেছে। পুলিশ লাইনে নামবে। এরশাদ এসেছে। যদিও এরশাদ আমাদের ভাই হন। (কত মানুষের নামই তো এরশাদ হতে পারে। এই এরশাদ নামের ভাইটি যখন প্রথম আমরা ঢাকায় আসি উনি চিড়িয়াখানায় ঘুরতে নিয়ে গিয়েছিলেন। চিড়িয়াখানার গেটেই প্রথম দুটো নেরি কুত্তা/ [কুকুরের অসম্মান হবে] কুকুরে সঙ্গে আমাদের দেখা হয়। তখন এরশাদভাই বলেছিলেন, এই যে এটা ১ নম্বরে দেখলে মনে রেখো। সব মিলিয়ে কটা প্রাণি দেখব ঘরে ফিরে যে বলতে পারবে সে গিফ্ধসঢ়;ট পাবে) কিন্তু এই এরশাদ তখনকার রাষ্ট্রনায়ক। ‘স্বৈরাচারী’ পরবর্তীকালে যার উপাধি হয়েছিল। ১৯৮৮ সালের বন্যার সময় তিনি গামবুট পরে বন্যদুর্গত মানুষদের দেখতে যেতেন। সেই চিত্র টিভি পর্দ্দায় দেখেছি কিনা মনে নেই তবে সেই ছবি অনেকবার মা- খালা- মামিদের মুখে শুনেছি। তারা তুলনা করতেন একজন পুরুষ রাষ্ট্রপ্রধান ও একজন নারী রাষ্ট্রপ্রধান বোঝাতে। নিজেরা নারী হয়েও তারা পুরুষকে / আদোতে ক্ষমতাকেই হয়ত উর্র্দ্ধে তুলে ধরতেন।

*নিপু এখন কোথায়? এই শহরেই আছে। ফেবু তো কাউকে আড়ালে রাখে না। দেখলাম মাথায় পট্টি/ ঘোমটা/ হিজাব বেঁধেছে। মায়েদের জেনারেশনে একটা বয়সের পর সবাই পরপারের কথা ভাবত। এখন মধ্য বয়সেই মানুষ দাড়ি/ টুপি/ হিজাবের ব্যবসাকে লাভবান করতে ব্যস্ত। কেবল আমি রয়ে গেলাম অপরিবর্তর্নীয়। ব্যাংকে ফ্রন্ট ডেস্কে যিনি বা যারা বা যাহারা বসে আছেন প্রত্যেকের মুখে দাড়ি। দাঁড়িওয়ারা যেহেতু মেয়েদের মুখের দিকে তাকান না সেহেতু আমার দিকে তাদের দৃষ্টি পড়ল না। কেউ বসতেও বলল না। একটু পরে একজনের দৃষ্টি পড়ল। বসতে বলল। কাজ হল আপাতত। উফ দম বন্ধ পরিবেশ। কেউ যদি কারো দিকে না তাকায় তাহলে কী অপরজনের অপমান হয় না? আমার তো খুব হয়। তুমি যদি আমার দিকে না তাকাও আমার সঙ্গে কী কথা/ কীভাবে কথা বলবে ভাই? মুখ না দেখলে কারো অভিব্যক্তি কী কোনভাবে ঠাওর করা যায়? 

এবার যাই পেটের খোরাক জোগাতে হবে।

 ব্যাংক থেকে হেঁটে হেঁটে ফিরতে গলির মুখে একটা ফোন এলো।

 ফোন দাতা: কফি না চুমু, নাকি ফরওয়ার্ড বাই লাঞ্চ।

আমি: দুনিয়া কেবল প্যাটের আর চ্যাটের।

ফোন দাতা: তা বটে। একটা কবিতা/ ববিতা শুনবে?

আমি: চ-বর্গীয় গালি মুখে এলেও বিশেষ ভদ্রলোক বলে দিকে পারলাম না। মিডিয়া কেবল রূপের পুজারী। গালাগালি চলল আরো কিছুক্ষণ।

যমুনা টিভির .. চাকুরি চলে গেছে। আর ওয়াকিল আহমেদ বসে আছেন। চেয়ারে তা দিচ্ছেন। একদিন লাইভ দেখলাম। মেয়েটা কথা বলছে। একাত্তর টিভি নাকি মাননীয়দের বেডরুমে চলে।

ফোন দাতা: থামো, থামো। ফোনে এসব বলো কেনো সোনা? কোথায় আছো বলো? একটু দর্শনে ধন্য হই।

আমি: আমি ধন্য হয়েছি ওগো ধন্য, তোমারই প্রেমের জন্য।

(তাদের দেখা হয়েছিল বা হবে কিনা আমাদের কথক প্রশ্নটির সমাধান না করেই এিেগয়ে গেলেন)

আবারও মিটিং চ্যাটিং সিটিং

কোন ইটিং নাই।

ক্লাসের টাইম এখন। পু পু ইনবক্স।

‘মিটিং চলছে, আজকের ক্লাসটা পোসপন্ড’ ‘পরে জানাব সময়’ ধন্যবাদ।

মিটিং এ হাতে ফোন

ভিসির অপমান। সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলবেন না। ইউজিসি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এক রকম চালায় আর কতৃপক্ষ আর একরকম চালায়। কিন্তু কেউ কাউকে ধরা দেয় না। মিটিং করে তারপর রিপোর্ট দেবো? এখানে মিটিং না করেও রির্পোট চলে কারণ কতৃপক্ষ রিপোর্ট চায়। সংবাদপত্রে কাজ ছেড়ে এমন সেবামূলক অথচ প্রাইভেট/ ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে প্রথমে অসুবিধা হত। কষ্ট পেতাম, সেই দ্বন্ধমুখর সময়গুলোর কথা মনে করে। ‘কাল সর্বাত্মক হরতাল হবে নাকি পরশু?’ এই নিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন আর অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলোর বাদ-বিবাদ চলছে। অন্যান্যদের যুক্তি সারা দেশে ছাত্রদের মধ্যে প্রচারণা চালাতে একদিন সময় লাগবে। সবাই জেনে বুঝে হরতাল পালন করবে। কানসাটে পল্লীবিদ্যুৎতের ইস্যু নিয়ে যে ৬ জন কৃষক নিহত হয়েছে আমরা ছাত্ররা তাদের সঙ্গে সংহতি জানাতে চাই। কিন্তু ছাত্র ইউনিয়ন যেহেতু বড় সংগঠন তাই অন্যরা বিপক্ষে গেলেও তারা হরতাল ডেকে দিলো। আপোস হলো এভাবে যে কাল কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হরতাল হবে আর পরশু সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হরতাল হবে। কত কথা যে মনে পড়ে. . .‘শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেবোনা’, আমাদের ধরণীতে শহীদের রক্ত’ সেই রক্ত কোনদিনও আপোষ করে না- সেই রক্ত কোনদিনও অন্যায় করে না’ আর আজ কোন ন্যায় করব না- এই মূলমন্ত্র মোদের। ( চলবে)