ঊর্মি চৌধুরী
কোলাহল থেমে গেলে চারপাশে সুনসান নীরবতা
এ এক অন্য পৃথিবী,
অনাবিল নিস্তব্ধতা,
চেনা গলিপথটা ভূতুড়ে মনে হয়,
কোথাও পলেস্তারা খসা দেয়ালের কান্না শোনা যায়,
ল্যাম্পপোস্টের নিয়নের ঝাপসা আলোটা প্রতিনিয়ত করছে লড়াই,
রক্তচোষক মশা নয়তো অস্পষ্ট ছায়ার সাথে লড়ছে।
জানালার পাশে দাঁড়িয়ে ঐ যে দূরের লোকালয়ে
আলো দেখি,তার উৎস কোথায়!
রঙিন পর্দায় মোড়ানো আলো সব চার দেয়ালে বন্দী,
এতটুকুও আছড়ে পড়ে না কার্নিশে।
বড্ড একপেশে লাগে নিজেকে,
ভয় হয় খুব,
আত্মচিৎকার শুনি,
কেউ একজন ভেতর থেকে তাড়া দেয়,
চুপিসারে তোমার হাতটা ধরতে চায়,আমি অপেক্ষায় থাকি।
দূরের আকাশটা মলিন চোখে চেয়ে থাকে ধরণীকে,
কী জানি কেমন লাগে!
তারও কী মায়া হয়!
তারও কী এই একাকিত্বে ভয়!
ধীরে ধীরে আঁধারটা আরও গাঢ় হলে, ছায়াদের আনাগোনা বেড়ে যায়,
কেউ সওদা করে,কেউ বেচাকেনার হাটে বেচে দেয় অনিঃশেষ।
নিঃশ্বাসে শুধু চাপা কষ্টের শব্দ,
কেঁপে উঠে হৃৎপিণ্ডটা,গুমরে ওঠে শব্দহীন আর্তনাদ।
রোদ চশমার আড়াল থেকে একসময় বেরিয়ে আসে কোজাগরী চাঁদ,
মেলে দেয় আলোর ফোয়ারা,
উৎসুক চোখ স্নান সেরে নেয় কাচগলা জোছনায়।
নিকষ আঁধার ম্লান করে জড়িয়ে থাকে মোহমায়া,
রূপোলি আলোর ছ’টায় ।
আজকাল তাকেও যে খুব রহস্যময়ী লাগে।
রোদে পোড়া এই ব্যস্ত শহর,নিয়নের আলোয় অস্পষ্টের ছায়া,চরম ধাঁধার রহস্যে ঘেরা
আলো আঁধারির তারতম্যে দারুণ জমে উঠে খেলা
কেউ কষে বারোমাসি,
কেউ খেলে রোজনামচায়
গোলমেলে হিসেবের নিত্য লুকোচুরি খসড়া খাতায়।
এই মায়ার শহর,জাদুর শহর আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধেছে মায়ায়।