.
ঊর্মি চৌধুরী
না,কিছু চাইতে আসিনি, হাত পেতে নিতেও আসিনি
জানি,তুমি দিতে পারো অঢের,
চাইলেই ভেজাতে পারো গ্রীবা,অধর,আপাদমস্তক
ঐশ্বর্যে,প্রাচুর্যে ভরা তোমার এ বুক
ভাবছো, তোমার বিশালতায় অনায়াসেই দেয়া যায় ডুব।
ভেবেছো কী কখনও?
আমার এতটুকু অনীহায় তোমার একেলা কাটে সকাল,
নিঃশব্দের শূন্যতায় বিকেল।
কোনো নূপুর ধ্বনি বেলাভূমির বালুচরে জলছাপ আঁকবেনা আর,
পা ভিজিয়ে,হাওয়ায় আঁচল উড়িয়ে কেউ অভিমান ভাঙাবেনা তোমার।
কেউ এসে ঝিনুকের কান্না শুনবে না, সাদা গোলাপি মুক্তোরা অভিমানে ফেটে পড়বে, ফুঁসে উঠবে জোয়ারে।
শঙ্খের আঘাতে পা কেটে কেউ অভিযোগও করবে না।
লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণে ত্যক্ত হবে তুমিও।
সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের আর্তনাদে অশ্রু গড়াবে না এক ফোঁটাও,
তোমার গর্জনে শুনে কেঁপে কেঁপে উঠবেনা আর কোনো পোড়া কপালীর হৃদয়।
রক্তিম সূর্যটা ডুবে যাবে অবলীলায়, একান্ত অবহেলায়।
কেউ উঁকি দিবে না,
তোমার মৌনতা ভাঙাতে আসবে না কেউ।
কী ভাবছো?
প্রাচুর্য সম্ভারে আরও বেশি হৃষ্টপুষ্ট হবে তুমি, সেই তো!
তবু প্রমোদতরী ভাসিয়ে তোমায় পাড়ি দিবে না
কোন ধনকুবের, রাজপুত্র
পূর্ণিমা রাতে,তোমার রূপের সুধায় গা এলিয়ে কেউ মধুচন্দ্রিমা জাগবে না।
আমার অভিমানে,
সহস্র তারা তোমার লোনাজলে আত্মাহুতি দিতে চাইবে।
পারবে তো সামাল দিতে,
দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর অমাবস্যার রাত কাটাতে?
ধরো, সূর্যটাও যদি পুনরায় ভেসে না উঠে তোমার ঐ অভিশপ্ত জলে, আকাশটা মুখ ফিরিয়ে নেয়,
কেউ আসবেনা,কেউ শুনবেনা তোমার আহাজারি।
আমিহীন তুমি শুধু শূন্যতায় ভাসবে।
তবে? কেন এই অহমিকা, মিছে দম্ভ তোমার?
তুমি না হয় অতিকায়,অতিশায়ী
আমিও যে কম নই।
আমার অনীহায়,অবহেলায়,অ-প্রেমে তুমিও ধরাশায়ী।