কাজী শবনম
“Show them how to cry
when pets and people die”
খুব অবাক লাগছে, কান্না আবার শেখাতে হয় নাকি? ওটা তো ভেতর থেকে এমনিই আসে। একদম না।
সবার সেই ফিলিংস থাকে না, তৈরি হয় না। কান্নাও শেখাতে হয়! আমরা চোখের সামনে কি এমন দেখি না যে ছোট বাচ্চারা কুকুর বেড়াল দেখলেই ঢিল ছুঁড়ে মারছে, বকা দিচ্ছে, কষ্ট দিয়ে আনন্দ পাচ্ছে? অথবা পরিবারের কেউ ব্যথা পেলো, বন্ধু ব্যথা পেলো, শিশুটি হাসছে, খুব আনন্দ হচ্ছে তার।
‘বাচ্চা মানুষ, এখনও এসবের বুঝ হয়নি’ বলে উড়িয়ে দেই আমরা। আসলে ব্যাপারটা এত হালকা ভাবে নেয়ার মতন না।
অনেক শিশুর ভেতর এই বোধগুলো স্বাভাবিকভাবেই আসে। যার মধ্যে আসে না, তাকে আমাদের বড়দের জীবনযাপন থেকে শেখাতে পারি। পরিবারের বাকি সদস্যদের প্রতি আমার কেয়ারিং, ফিলিংসগুলো বাচ্চার সাথে শেয়ার করতে পারি, তাকে সাথে নিয়ে কেয়ার করতে পারি। বাড়ির কাজের সহকারী, পোষা প্রানী অথবা রাস্তার কুকুর বেড়ালের প্রতিও যেনো নির্দয় না হয়, সে ব্যাপারে শিক্ষা ছোটবেলাতেই দিতে হয়। অকারণে গাছের একটা পাতাও যেনো ছিঁড়ে আনন্দ না নেয়। ডেসট্রাকটিভ কাজ করে আনন্দ পাওয়াটা একটা নেশার মতন; যেটা শৈশবে ছোট ছোট বিষয় দিয়ে শুরু হলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে ডেসট্রাকটিভ কাজের ধরনও গুরুতর হতে থাকে এবং পৈশাচিক আনন্দের মাত্রাও বাড়তে থাকে।
চকলেট খুব মজার জিনিস। শিশুর কাছে যেমন, আপনার কাছেও। শেয়ার করতে শেখান। কাজ করলে আপনারও ক্লান্ত লাগে, বিশ্রাম দরকার, কাজে হেল্প দরকার। শেখান শিশুকে। তাকে ফীল করতে দেন আপনার কষ্ট হচ্ছে, ক্লান্ত লাগছে।
নিজে ব্যথা পেলে যেমন কষ্ট হয়, অন্য কেউ ব্যথা পেলে তারও কষ্ট হয়; এই ব্যাপরটা শৈশব থেকে শেখান। পরিবারের কারো সাফ্যল্যে বাকিরা যেনো খুশী হতে পারে সেই শিক্ষা দিন। আবার পরিবারের কারো ব্যর্থতায় বাকিরা যেনো সমব্যথী হতে পরে সেই শিক্ষা দিন।
পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে পাশে থেকে তার সেবা শুশ্রূষা করার বিষয়টা শিশু দেখে শিখবে। আপনার জীবন যাপন শিশুর ফিউচার বিহেভিয়ার বিল্ড করবে। না হয় বড় হয়ে হুট করে শিশুর মধ্যে মানবিক দিকগুলো চলে আসবে না; বোঝা মনে হবে তার কাছে। হয়তো অবাক লাগছে, এমনও কি হয় নাকি, কারো কাছে কি ওমন বোঝা লাগে নাকি! লাগে। পরিবারের সদস্য অসুস্থ/শয্যাশায়ী থাকলেও সামান্যতম ফিলিংস না হয়ে নিজের লাইফে আনন্দে মত্ত থাকতে পারে কেউ কেউ। এটা একদিনে হয়নি। এর শুরু শৈশব থেকে।
লেখা: কাজী শবনম, আরলি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট আর্টিকেল রাইটার
মডেল: ইসরাত জাহান লিজা ও নম্রতা