নিশাত শারমিন নিশি
যারা সকালের নাস্তা বা অন্য যে কোন সময় রুটি খেয়ে থাকেন তাদের মনে সবসময় খুব কমন একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন থাকে যে, কোন রুটি খাব-লাল না কি সাদা? এক্ষেত্রে প্রথমেই যে কথাটি বলতে চাই, খাবার গ্রহনের আগে আমাদের ভাবতে হবে আমি যে খাবারটা গ্রহণ করছি সেটা যেন আমাদের শরীরে কাজে আসে। এক্ষেত্রে যারা রুটি খেয়ে থাকেন তাদের বলছি রুটি কার্বোহাইড্রেড এর প্রধান একটি উৎস।
যারা ব্রেকফাস্ট স্কিপ করেন বা ব্রেকফাস্ট করতে ইচ্ছে করেনা তাদের সবসময় পরামর্শ দিয়ে থাকি যেন ব্রেকফাস্ট কিছুতেই স্কিপ না হয়। এক্ষেত্রে সকালের নাস্তায় আমরা রুটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকি। আর রুটি খেতে গেলেই আমাদের মনে প্রশ্নটি চলে আসে সাদা রুটি নাকি লাল? কোনটা আসলেই ভাল।
খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে আমরা যেন অতিরিক্ত রিফাইন করা জিনিস না খাই। ন্যাচরাল খাবারগুলো দেখতে সুন্দর না হলেও অনেক বেশি হেলদি। যেমন লাল আটা, লাল চালের ভাত এগুলো দেখতে এতোটা সুন্দর না হলেও এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইভার আছে। পুরো বিষয়টা খাবারটির প্রসেসিংয়ের উপর নির্ভর করে। সাদা আটা যেটা প্রস্তুত হয়ে আমাদের কাছে আসে সেজন্য কয়েকটা ধাপ অনুসরণ করতে হয় এবং এতে খাদ্যগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে লাল আটাটা সবচাইতে বেস্ট। কারণ এতে ফাইভার আছে। এই ফাইভার সমৃদ্ধ লাল আটায় ফ্যাট কম থাকে প্রোটিন বেশি থাকে, ক্যালরি কম থাকে। এতে থাকে ফলিক এসিড, ফসফরাস,জিংক এবং কপার।
আবার আপনি যে লাল আটাটা খাচ্ছেন সেটা আপনার জন্য স্বাস্থ্যসম্মত কিনা সেটাও মাথায় রাখতে হবে। কারণ সবাই অতিরিক্ত ফাইভার গ্রহণ করতে পারেনা। তবে যাদের এরকম সমস্যা নেই তাদের যদি কোন পেটের সমস্যা থাকে ফাইভার সমৃদ্ধ লাল আটা নিয়মিত খেলে পেটের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
যাদের নিউরোলোজিক্যাল বা স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা আছে তাদের জন্য লাল আটার রুটিটা ভাল কাজ করবে। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। ভিটামিন বি এর ঘাটতি থাকলে অনেকের নার্ভ দুর্বল হয়ে যায়। তখন অযথাই দুর্বল লাগা, গা ঝিমঝিম করা, ম্যাজম্যাজ করা এ সমস্যাগুলোর কথা অনেকেই বলে থাকেন। এ সমস্যাগুলোর অন্যতম কারণ ভিটামিন বি এর অভাব। লাল আটা খেলে এ ধরণের দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
এছাড়াও যাদের কনস্টিপেশন প্রবলেম ,পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম আছে তারা যদি রিফাইন করা খাবার না খেয়ে এই লাল আটা খান তবে ভাল কাজে আসবে। এছাড়াও যাদের ওবেসিটি আছে তাদের ওজন হ্রাসে লাল আটার রুটিটা অনেকটাই হেল্প করবে।
নিশাত শারমিন নিশি, পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান (পপুলার মেডিকেল কলেজ হসপিটাল)