অবন্তী অন্তরা
মনের রঙে রাঙিয়ে হেমন্ত বা অটাম আসে নিউজিল্যান্ডে। একটু হিমেল বাতাস আর নানা রঙের পাতার গাছগুলো যেমন সুন্দর তেমনি সূর্যের অল্প তাপে প্রকৃতিও থাকে শান্তিময়। এই সময়ে চার রঙের পাতার দেখা মেলে নিউজিল্যান্ডে। লাল, কমলা,সবুজ আর হলুদ। এমনিতেই এখানকার প্রকৃতি একটু বেশি রকমেরই সুন্দর। মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসেন এখানে।
কাজের অবসরে আমরাও একটু বেরিয়ে পড়লাম। আমরা ছয় জন (দু’বোনের পরিবার) রোদ উঠলেই ঘরের বাইরে থাকতে ভালবাসি। গেলো সপ্তাহেই ঘুরে এলাম ক্রাইস্টচার্চ এর স্পেনসার পার্কে।
ঘরের একটু খাবার আর চা সামগ্রী নিয়ে চলে গেলাম মাঠে। প্রথমে কিছুক্ষণ ফুটবল আর রাগবী বল পাস পাস খেলে গেলাম পার্কের এক্টিভিটি সেকশনে। ওখানে লং মাঙ্কি রাইডারের মত ক্লাইম্বারে শিশুদের সাথেই উঠে পরলাম। আর দারুন একটা জাইয়ান্ট স্ট্রাইটে (টায়ার দিয়ে বানানো) চড়ে ধরলাম বাংলা গান “একদিন ছুটি হবে “। আনন্দে আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল।
এরপর গেলাম পাশের ওয়াইল্ড লাইফ পার্কে। ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা জাতের হাস মুরগি আর আছে অসংখ্য পাখি। মনকে আনন্দে রাখতে ঘোরাঘুরির তুলনা হয়না। এখানকার মানুষ একটু রোদ উঠলেই বাইরে ছুটে আসে। আর এই অটাম সিজনে গাছে গাছে পাতাদের রঙ মনেও রঙের দোলা দিয়ে যায়।
আমি নিউজিল্যান্ডে প্রায় দশ বছর ধরে আছি। এখানকার মানুষেরাও কর্মব্যস্তার মাঝে সময় পেলেই ছুটে যায় প্রকৃতির কাছে। ভালবাসে পরিবার নিয়ে ঘুরে বেড়াতে। মানব উন্নয়ন সূচকেও দেশটি রয়েছে উপরের দিকে। জীবনযাত্রার মান, শিক্ষার হার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা রক্ষার ক্ষেত্রেও অনেক অগ্রসর দেশটি।
প্রবাসী জীবনের একাকীত্ব ও নি:সঙ্গতার মাঝেও উপভোগ করার চেষ্টা করি এখানকার সৌন্দর্য ও নানান সুবিধাগুলো। আর দুই বোন কাছাকাছি থাকায় খুব একটা খারাপও লাগেনা। মাঝে মাঝে বাবা-মা আর ভাইয়ের সাথে দেশে ভিডিও কলে কথা বলি।
এভাবেই ব্যস্ততা, একটুখানি অবসর আর জীবনকে উপভোগ করার মাধ্যমেই আমাদের দিন কেটে যায়।
অবন্তী অন্তরা, নিউজিল্যান্ড থেকে