নাদেরা সুলতানা নদী
শুধু কন্যাশিশু বলেই…
অবহেলা না ছুঁয়ে যাক পৃথিবীর কোন একটি কন্যা শিশুকেও,
তার আগমন হোক কাঙ্ক্ষিত, ভালোবাসার অনাবিল।
কন্যাশিশুটি কিশোরী হয়ে উঠুক,
স্নিগ্ধ বিশুদ্ধ হাওয়ায় সুস্থ মানুষের পৃথিবীতে
মেলুক তার মন শরীর নিঃশ্বাস ছুঁয়ে সবুজ, সুন্দর নীল!
কিশোরী হেঁটে যাক মাথা না নুয়ে, দিগন্ত ছুঁয়ে, নির্ভয়ে
যেন নেই কোথাও কোন অন্ধকার, আতংকের কালো হাত
গ্রামে বন্দরে শহরে কিংবা অচেনা দূরের কোন নাম না জানা পাহাড়ে
কিশোরী মেলুক চুল, মাখুক প্রজাপতি রঙ বর্ণিল!
প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা জলে একটি তরুণীও না ভেজাক চোখ
যেন লুকাতে না হয় অনাকাঙ্ক্ষিত কোন গা ঘিনঘিনে ছোঁয়া!
বৃষ্টি এসে যেন বলে যায় ‘তুমি প্রকৃতির ভালোবাসার কন্যা’
ভয় নেই মেয়ে, তোমার জন্যে কোথাও কেউ আছে
নিয়ে প্রেম, বর্ষার কদম, বেলির শুভ্রতা মাখা আলিঙ্গন মায়া!
ভয় পেয়োনা মেয়ে জনম…
এই পৃথিবীর রঙ রূপ রস গন্ধ তোমারও।
কিছু দোপেয়ে পুরুষরূপী অমানুষ
যদি কালি মেখে তোমায় ছুঁড়ে ফেলতে চায় দূরে অন্ধকারে
তুমি কী থেমে যাবে? তুমি কি যাবে থেমে?
তুমি কেন গুটিয়ে চলে যাচ্ছ প্রতিদিন ছদ্মবেশে,
তোমার যা নয়, তা দিয়ে নিজেকে লুকিয়ে ফেলার আবদারে !
এই পৃথিবীর সব তোমার হোক, এই জল, মাটি, হাওয়া, আকাশ
মরার আগেই বন্ধ না হোক তোমার চলা স্বাভাবিক প্রশ্বাস!
(বাংলাদেশে সবসময় একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা চলতেই থাকে। তা দেখে শুনে একটু বেশিই বিমর্ষ হই, তাই এলোমেলো কথামালা। কোন নাম দিলাম না এর, যে যার ইচ্ছে মতো দিয়ে নিন। এটাকে ঠিক কাব্য বলা যায়না, আসলে এক উদাত্ত আহ্বান যাদের সেই সংবেদনশীল মন আছে একটু ভাববার। কী ভীষণ এই বীভৎসতা, যা আমাদের মেয়ে জীবনটাই আজ দুর্বিষহ করে তুলে আজও বাংলাদেশের আনাচে কানাচে)
নাদেরা সুলতানা নদী, লেখক, সংস্কৃতি কর্মী, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া